ভৌগলিক পরিচিতি
মাগুরা জেলার ভৌগলিক প্রফাইল
অবস্থান
মাগুরা জেলা মাগুরা ২৩ ডিগ্রী ২৯ মিনিট উত্তর অক্ষাংশে এবং ৮৯ ডিগ্রী ২৬ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। জেলার উত্তরে ফরিদপুর, দক্ষিণে যশোর, পূর্বে নড়াইলও ফরিদপুর জেলা এবং পশ্চিমে ঝিনাইদহ জেলা। মাগুরা জেলা সমুদ্র সমতল হতে ২৬ ফুট উচ্চে অবস্থিত।
আয়তন
জেলা মোট আয়তন ১০৩০.৫৮ বর্গ কি: মি:। জনসংখ্যার ঘনত্ব ৭৮৭ জন প্রতিবর্গ লোমিটার
ভূ-প্রকৃতি
মাগুরা বাংলাদেশের সম্প্রতিককালের গর্বিত প্রাবন সমভূমির অমত্মর্গত জেলা। বাংলাদেশের অন্যান্য সূত্রের মত মাগুরা জেলাও নবীন ভূতাত্ত্বিক যুগে অর্থাৎ সত্তর হাজার বছর আগে সৃষ্ঠি হয়েছে। মূলত পক্ষ নদীর পলি সঞ্চয়নের দ্বারা এ বদ্বীপ অঞ্চল গর্বিত হয়েছিল। এখানকার নদীগুলোর উৎস পক্ষ তাই এ এলাকা পলি আছে। পূর্বভাগের মহম্মদপুর উপজেলা এ জেলার নীচু এলাকা।
ভূ-তাত্ত্বিক গঠন
মাগুরা জেলার পূর্ব অঞ্চল ব্যতীত প্রায় সমগ্র অংশ সমান উচ্চতা বিশিষ্ট। ৪র্থ মহাযুগীয় পলল সঞ্চয় দ্বারা মাগুরা জেলা গঠিত। অভদ্ভুয় সমভূমি। এ জেলার মৃত্তিকার পর্যালোচনায় দেখা যায় উপরের সত্মরে কাদা পলি এবং শুষ্ক পলি রয়েছে। এ সত্মর ৫০ ফুট হতে ১৫০ ফুট পর্যন্ত গভীর। এর পরবর্তী সত্মরে শুষ্ক পলির সাথে মধ্যমাকৃতির মোটা বালিকনা রয়েছে। মাগুরা জেলায় সমভূমি গঠনে পদ্মা এবং তার দুটি প্রধান শাখা নদী মাথা ভাঙ্গা এর গড়াই মধুমতির বিশেষ অবদান রেখেছে।
নৃ-তাত্ত্বিক
মাগুরায় বসবাস রত জনগোষ্ঠির নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের তেমন সুস্পষ্ট পরিচয় পাওযা যায় না। ধারণা করা হচ্ছে এখানকার র্থ, দ্রাবিড়, মঙ্গোলীয়, অস্ট্রালয়েড, জনগোষ্ঠীয় মিশ্রণে সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মতই এ জেলায় মানুষের গাত্র, বর্ণ, দৈহিক, আকার, চুল, চোখ প্রভৃতি।
নদ-নদী
মধুমতি/ গড়াই, কুমার, নবগঙ্গা, চিত্রা, ফট্কী, মূচিখালী প্রভৃতি মাগুরার প্রধান নদী। একসময় আরাফানী মগ দস্যুরা এ সব নদীবক্ষেই মাগুরাতে এসেছিল লুণ্ঠন করতে। নৌকা ও জাহাজে করে দেশী ও বিদেশী পণ্যসামগ্রী আমদানি ও রপ্তানী করত। তাই সহজেই অনুমেয় একসময় এসব নদীসমূহ প্রবাহমান ছিল। বর্তমানে প্রতিটি নদীই তার নাব্যতা হারিয়েছে।
মৃত্তিকা
পদ্মা ও তার শাখা নদী দ্বারা বাহিত হিমালয় পর্বতের পলল দ্বারা মাগুরার মৃত্তিকা গঠিত। এ মৃত্তিকায় উপরের সত্মর সুক্ষ্ম বালুকণা পলি এবং কাদা দ্বারা গঠিত। এর নীচের সত্মর অপেক্ষাকৃত মোটা বালুকণা দ্বারা সমৃদ্ধ। মৃত্তিকার গুণাগুণ ও বৈশিষ্ট্য এবং আদি শিলার উপর ভিত্তি করে মাগুরা জেলার মৃত্তিকাকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথাঃ-
ক) পস্নাবন ভূমির চুনযুক্ত গাঢ় ধূসর মৃত্তিকা যা জেলার পূর্বাঞ্চলে দেখা যায়।
খ) পস্নাবন ভূমির চুনযুক্ত বাদিমী মৃত্তিকা যা জেলার পশ্চিমভাবে দেখা যায়।
গ) পিট মৃত্তিকা যা জেলার নিম্ন অঞ্চলে দেখা যায়।
জলবায়ু
মাগুরার জলবায়ু সমভাবাপন্ন। এখানকার শীতকাল শুষ্ক এবং গ্রীষ্মকাল, উষ্ণ ও আর্দ। গ্রীষ্মকালে এ জেলার উপর দিয়ে মৌসুমী বায়ু প্রবাহিত হয় এবং তখন সর্বাধিক আদ্রতা পরিলক্ষিত হয়। এ সময় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। মাঝে মধ্যে নভেম্বর-ডিসেম্বরে এখানে বঙ্গোপসাগর থেকে আগত ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে কয়েকদিন বৃষ্টিপাত হয়। গ্রীষ্মকালে কাল বৈশাখির প্রভাব এখানে স্পষ্ট।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ
মাগুরা জেলায় বন্যা দেখা দেয় ১৯৪৩, ১৯৪৯, ১৯৮৫, ১৯৮৬, ১৯৮৭, ১৯৮৮, ১৯৯০, ২০০৪, সনে।
ছবি
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস